ঐক্যের ভাস্কর্য: বিশ্বের বর্তমান বৃহত্তম ভাস্কর্য
গুজরাটে বয়ে যাওয়া নরমদা নদীর পাশে অবস্থিত সর্দার বল্লভভাই পটেলের ভাস্কর্য এখন পৃথিবীর সর্ববৃহৎ।
মোদী সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় এ ভাস্কর্য বানানো শুরু হয় ২০১৩ সালে। প্রায় ৪২ মাস ধরে ২৫০ ইঞ্জিনিয়ার ও ২০০০ শ্রমিকের কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে এ ভাস্কর্যটি উদ্বোধন হয় অক্টোবরে। এটি বানাতে খরচ হয়ে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার!!
এটির উচ্চতা প্রায় ১৮২ মিটার (প্রায় ৬০০ ফিট এর মতো!) যা স্ট্যাচু অফ লিবার্টির চেয়ে প্রায় দ্বিগুন লম্বা [স্ট্যাচু অফ লিবার্টির উচ্চতা প্রায় ৯৩ মিটার(৩০৫ ফিট) ]।
এটি বানানো হয় বাইরে ব্রোঞ্জ দিয়ে আর বানাতে গুজরাটের মাটিও ব্যবহার করা হয় যা ভাস্কর্যটি তৈরীতে সকলের সমান প্রতিনিধিত্বের প্রতীকি গুরুত্ব ধারণ করে বলে মোদীর সরকারের লোকজন দাবী করেন।

এই ভাস্কর্যটি যার প্রতিকৃতিতে বানানো, তিনি হলেন সরদার বল্লভভাই পটেল। তিনি ছিলেন ভারতের প্রথম উপ প্রধানমন্ত্রী। তাকে বলা হতো ‘ভারতের লৌহমানব’, কারণ তিনি ১৯৪৭ সালে ভারতবিভাগের পর দাঙ্গার মাঝেও ভারতের বিভিন্ন এলাকার ভাগ করেছিলেন কঠোরহস্তে। তিনি গুজরাট থেকেেই উঠে এসেছিলেন।

এ ভাস্কর্য নিয়ে নরেন্দ্র মোদী বলেন-
“এটি ভারতের নীতি ও দৃঢ়তার একটি প্রতীক”
এ বিশাল ভাস্কর্যটি প্রায় ২০,০০০ বর্গ মি. এলাকা জুড়ে আছে পাশাপাশি একটি ১২ বর্গ কি.মি কৃত্রিম লেকও খনন করা হয়েছে। একটি মিউজিয়াম ও স্থাপন করা হয়েছে যা ‘পটেল’ সাহেবের ঐতিহাসিক কার্যক্রমকে তুলে ধরছে। মিউজিয়ামটিতে সংগ্রহে প্রায় ৪০,০০০ নথিপত্র ও ২০০০ ছবি সহ তার জীবনী নিয়ে একটি রিসার্চ সেন্টার ও আছে।
যদিও মোদী সরকার দাবী করছে যে এটি আসলে ‘হারিয়ে যাওয়া জাতীয় নেতাদের পুনরায় তাদের যোগ্য স্থান দেয়া’ এবং ‘গুজরাটে ট্যুরিজম বৃদ্ধি করা’-র মতো কাজ করবে, মূলত এটিকে বিজেপির একটি রাজনৈতিক চাল হিসেবেই দেখছেন অনেকে।
কারণ এর মাধ্যমে মোদী নিজের রাজ্য গুজরাটে নিজের অবস্থানকে আরো দৃঢ় করে তুলতে পারেন এবং বিজেপির প্রচারণাও চালাতে পারেন একে কেন্দ্র করে। তাছাড়া এটি কংগ্রেসের একটি বড় সুবিধা কেড়ে নেবে – ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি কংগ্রেসনেতা নেহেরুর ইমেজকে একচ্ছত্রভাবে কংগ্রেসের ব্যবহারের জায়গাটা রাখতে দেয়না, কারণ বিজেপি ঐতিহাসিক নেতাদেরকে সমান গুরুত্ব দেয় এটিই দেখানো হচ্ছে এই ভাস্কর্যের মাধ্যমে।
সাধারণ মানুষের মধ্যে গুজরাটের চাষীদের জন্য এটি ঠিক কতটা লাভজনক, তা দেখা যায়না। যে টাকাটি ভারতের গুজরাট রাজ্যের সরকারকে দিতে হয়েছে এটি তৈরি করতে, তা অনেক বড় একটি অংক আর সেটি যে ট্যুরিজমের মাধ্যমে পুষিয়ে নেয়া যাবে, তা আসলে বলা যাচ্ছেনা। সে টাকাটি গুজরাটের দুস্থ কৃষকদের উন্নতিতেও ব্যবহার করা যেত। সেজন্য সেখানকার কৃষকেরা খুব একটা খুশি নন। এ ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে ছোটখাট সহিংস বিক্ষোভও হয়েছে, যদিও মোদী সরকার তা বড় করে দেখতে ইচ্ছুক নন।
এই ভাস্কর্যের নিয়ে আপনার কি মতামত? কমেন্ট করে জানিয়ে দিন!
FEATURED IMAGE CREDIT: Amit Dave/Reuters
Waste of money 😐