নখ যেভাবে বড় হয়
জন্মের পর থেকেই একজন সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষ তার ৫ হালি আঙুলে ৫ হালি নখ নিয়ে বড় হতে শুরু করে। তবে তার বড় হওয়াকে কেউ বাধা না দিলেও, নিজের সুস্বাস্থ্যের দিকে লক্ষ্য রেখেই সে তার নখের বড় হওয়াকে বাধা দেয়।
সেই শৈশব থেকেই ক্রমান্বয়ে উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে যাওয়া এ নখ কীভাবে বড় হয় সেই খবর কি জানা আছে?
জানা থাকলে ভালো, রিভাইস দিন; না জানলে সহজ ভাষায় জানিয়ে দিচ্ছি, জেনে নিন।
আমাদের নখগুলো কেরাটিন নামক এক প্রকার প্রোটিন দিয়ে তৈরি। এর বৃদ্ধি, বয়স এবং শারীরিক অবস্থার উপর নির্ভরশীল। যেমন বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছাবার আগ পর্যন্ত আমাদের নখ যে হারে বৃদ্ধি পায়, বয়ঃসন্ধির পর তা হয়ে যায় প্রায় অর্ধেক। আবার একজন গর্ভবতী মহিলার নখ স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পায়। বিভিন্ন হরমোনের প্রভাবে বিপাকক্রিয়া দ্রুততর হয় বলেই তখন মহিলাদের বেলায় এমনটি হয়ে থাকে।
যা-ই হোক, মূল আলোচনায় ফিরে আসা যাক।
ছবিটি একবার ভালো করে খেয়াল করুন। মাটির নিচে গাছের শেকড়ের মতো চামড়ার নিচে নখেরও একটি মূল থাকে, একে বলে ম্যাট্রিক্স। এ ম্যাট্রিক্সেই প্রতিনিয়ত নতুন কোষ তৈরি হতে থাকে। নতুন কোষগুলো পুরাতনদের সামনের দিকে ধাক্কা দেয় আর বলে, “ভাই, এগোচ্ছেন না কেন?” কিন্তু সামনে থাকা বড় ভাইদের কপাল থাকে খারাপ। তাই তারা সামনে যেতে যেতেই অক্কা পেয়ে বসে। আমরা যতদিনে চামড়ার বাইরে নখের অংশ দেখতে পাই, ততদিনে তারা মারা গেছে। এজন্যই নখ কাটলে আমরা ব্যথা পাই না।
এবার একটু নখের আশেপাশে তাকানো যাক। চামড়ার সরু যে অংশের ভেতর থেকে বেরিয়ে নখ পৃথিবীর আলো দেখে, তাকে বলে কিউটিকল। এটি ম্যাট্রিক্সকে জীবাণুর হাত থেকে রক্ষা করে। আবার নখের গোড়ায় যে অর্ধচন্দ্রাকৃতির অংশটি দেখা যায়, তাকে বলে লুনয়ুলা। এটিও ম্যাট্রিক্সেরই একটি একটি অংশ।
আজকের নখবিদ্যা নিয়ে কিছু মজার তথ্য দিয়ে শেষ করা যাকঃ
(১) আমাদের হাতের নখ প্রতিদিন ০.১ মিলিমিটার করে বাড়ে। তবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে এ হার কমতে থাকে।
(২) হাতের নখগুলো পায়ের নখের তুলনায় ৩-৪ গুণ তাড়াতাড়ি বড় হয়।
(৩) আমাদের মাঝে কেউ কেউ বামহাতী, আবার কেউ ডানহাতী। তো যে যেই হাতে কাজ করে অভ্যস্ত, তার সেই হাতের নখগুলো তুলনামূলক তাড়াতাড়ি বড় হয়।
(৪) আমাদের যে আঙুলটি সবচেয়ে বড়, সেই আঙুলের নখও তাড়াতাড়ি বাড়ে।
(৫) শীতকালের তুলনার গ্রীষ্মকালে নখ তুলনামূলক তাড়াতাড়ি বড় হয়।
Feature Photo Source: Pixabay.com